পৃষ্ঠাসমূহ

সিজদায়ে সাহু ও ১৫ টি ভুল..!!

1.      আপনার নামায/সালাতের ভিতর যদি কোন ওয়াজীব তরক হয়ে যায় তাহলে অবশ্যই সাহু সিজদা দিতে হবে। যদি না দেন তাহলে আপনার নামায হবে না।
2.      সাহু সিজদা দেয়ার নিয়ম হল: শেষ রাকাতে আত্তাহিয়্যাতু পড়ে শুধু ডান দিকে সালাম ফিরিয়ে টি অতিরিক্ত সিজদা দেওয়া । সকল সিজদার মাঝখানে অবশ্যই তাসবীহ পরিমান সোজা হয়ে বসতে হবে। তারপর আবার আত্তাহিয়্যাতু, দুরুদ শরীফ দোয়া মাসুরা পড়ে নামায শেষ করতে হবে। তবে নামাযে যদি কোন ফরয তরক হয়ে যায় তাহলে সাহু সিজদা দিয়ে কোন লাভ হবে না। আবার নতুন করে নামায পড়তে হবে
3.      এখানে সহজ ভাবে নামাযে কখন সাহু সিজদা দিতে হবে আর কখন দিতে হবে না এই মাসলা- মাসায়েল গুলি নিয়ে আলোচনা করবো। ( সাহু সিজদার এই মাসায়েল, ছেলে মেয়ে উভয়ের নামাযের ক্ষেত্রেই সমান।)
4.      যদি জামাতে নামায পড়েন তাহলে ইমাম সাহেব যদি সাহু সিজদা দেন তবে দিবেন। আর যদি জামায়াতে দেরি করে, মানে বা বা রাকাত পরে উপস্থিত হন আর যদি ইমামের সালাম ফিরানোর পর নিজে পড়ার রাকাতে কোন ওয়াজীব তরক হয়ে যায় তাহলে  সাহু সিজদা দিবেন। নিচে আরো কিছু ক্ষেত্র দেয়া হলো:----
Ø  . ফরজ নামাযের প্রথম রাকাতে সুরা ফাতেহা পড়া ওয়াজীব। যদি ফরজ নামাযের প্রথম রাকাত বা ২য় রাকাত বা উভয় রাকাতেই সুরা ফাতেহা ভুল বশত না পড়েন তাইলে সাহু সিজদা দিতে হবে। আবার ফরজ নামাযের ৩য়/৪র্থ রাকাতে সুরা ফাতেহা পড়া সুন্নত। তবে যদি কোন ফরজ নামাযের ৩য়/৪র্থ রাকাতে সুরা ফাতেহার পর অন্য সুরাহ পড়েন বা না পড়েন,  সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না
Ø  . ফরজ নামাযের প্রথম রাকাতে সুরা ফাতেহা পড়ার পর অন্য একটি সুরা মিলানো ওয়াজীব। যদি  ভুল বশত ফরজ নামাযের প্রথম রাকাতে সুরা ফাতেহা পড়ার পর অন্য কোন সূরা না পড়েন তাহলে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে।
Ø  আবার ফরজ নামাযের ৩য়/৪র্থ রাকাতে সুরা ফাতেহা পড়ার পর অন্য কোন সুরা পড়ার নিয়ম নেই। তবে  ভুল বশত ফরজ নামাযের ৩য়/৪র্থ রাকাতে সুরা ফাতেহা পড়ার পর অন্য কোন সুরা পড়ে ফেললেও সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না,যা আগেই বলা হয়েছে
Ø  . সুন্নত নফল সব নামাযেই সকল রাকাতেই সুরা ফাতেহা পড়া সুরা ফাতেহা পড়ার পর অন্য একটি সুরা মিলানো ওয়াজীব। যদি যে কোন সুন্নত/নফল নামাযের যে কোন রাকাতে সুরা ফাতেহা বা সুরা ফাতেহার পর অন্য একটি সুরা না পড়েন তাহলে আপনার একটি ওয়াজীব তরক হলো, এতে  অবশ্যই সিজদায়ে সাহু দিতে হবে
Ø  . ভুল করে যে কোন রাকাতে রুকু বা সিজদা দিলে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে
Ø  . সুরা ফাতেহা পড়ার পর এখন কি সুরা পড়বো এই চিন্তায় যদি তসবীহ পরিমান সময় চলে যায় তাইলে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে। অথবা কোন সুরার কোন আয়াত ভুলে গেছেন আয়াত কে স্মরন করার জন্য যদি তসবীহ পরিমান সময় চলে যায় তাইলে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে। তবে অই সুরাহ বাদ দিয়ে অন্য সুরা শুরু করলে সাহু দিতে হবে না।
Ø  . ফরয সুন্নত নামাযের ১ম বৈঠকে যদি ভুলে বার আত্তাহিয়্যাতু পড়ে ফেলেন -সাথে দরুদপাঠ দোয়া মাসুরা পড়েন তাহলে সিজদায়ে সাহু দিতে হবেনা, ১ম বার উচ্চারণ ভুল হওয়ায় আবার ইচ্ছা করেও ২য় বার পড়লেও সাহু সেজদা দিতে হবে না
Ø  আবার ফরয সুন্নত নামাযের ২য় রাকাতের ১ম বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু পড়ার পর যদি দুরুদ শরীফের আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদ পর্যন্ত পড়ে ফেলেন তাইলে শেষ বৈঠকে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে। তবে এরচেয়ে কম পড়ে ফেললে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না
Ø  . যেকোন বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু পড়ার সময় যদি ভুলে সুরা ফাতেহা পড়ে ফেলেন তাহলে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে। তবে নিয়ত বাধার সময় ছানার বদলে ভুলে দোয়া কুনুত পড়ে ফেললে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না
Ø  . তিন বা চার রাকাত বিশিষ্ট নামাযে ২য় রাকাতের প্রথম বৈঠক ভুলে গেছেন এবং ৩য় রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে গেছেন, যদি অর্ধেকের কম দাঁড়িয়ে থাকেন তাইলে বসে পড়বেন এবং আত্তাহিয়্যাতু পড়ে ৩য় রাকাতের জন্য দাড়াবেন। এই অবস্থায় সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না, কোমর সোজা হলেই তবে সাহু দিতে হবে
Ø   . যোহর এশার ৪র্থ রাকাতে বসতে মনে নাই। একদম সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে ৫ম রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে গেছেন। তাও মনে হবার সাথে সাথে বসে পড়বেন। আত্তাহিয়্যাতু দুরুদ শরীফ পড়ে সালাম ফিরাবেন। এক্ষেত্রে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে আর যদি ৫ম রাকাতে সুরা ফাতেহা পড়ে ফেলেন এবং রুকুও করে ফেলেন তাহলেও বসে পড়বেন। এই অবস্থায় সিজদায়ে সাহু দিতে হবে।
আর যদি রুকু করার পরও মনে না হয় যে ভুল হচ্ছে, তাহলে আরো রাকাত পড়ে মোট রাকাত পড়বেন। এক্ষেত্রে শেষ রাকাত নফল প্রথম রাকাত ফরয হিসাবে আদায় হবে
Ø  . নামায রাকাত পড়েছেন না রাকাত পড়েছেন এই রকম সন্দেহ যদি কখনোও হয়ে থাকে তাহলে কম টা ধরে নিয়ে বাকি টা পড়তে হবে, যেমন নাকি সন্দেহে ধরতে হবে
Ø  ১০. নামায শেষ হওয়ার পর সালাম ফিরানোর পর যদি নামায রাকাত পড়েছেন না রাকাত পড়েছেন এই রকম সন্দেহ যদি হয়ে থাকে তাহলেও কম টা ধরে নিয়ে বাকিটা (মসজিদ থেকে বাড়ি আসলেও) পড়ে সাহু সেজদা দিলে হয়ে যাবে।।আর যদি স্পষ্ট ভাবে মনে পড়ে যে নামায রাকাত পড়েছেন এবং  কিবলামুখি হয়ে বসে আছেন এবং কারো সাথে কথা বলেন নি তাহলে সাথে সাথে দাঁড়িয়ে যেয়ে আরেক রাকাত পড়ে সিজদায়ে সাহু করে সালাম ফিরাবেন। তবে কারো সাথে কথা বলে ফেললে /, নামাজ বা অজু কারণ দেখা দিলে নামায পুনরায় পড়তে হবে
Ø  ১১. একই নামাযে সিজদায়ে সাহু করার একাধিক কারন পাওয়া গেলেও একটি সিজদায়ে সাহু করলেই হবে
Ø  ১২. বিতর নামাযে দোয়া কুনুত না পড়েই রুকুতে চলে গেছেন সাহু সেজদা দিতে হবে, আর দোয়া কুনুতের জায়গায় অন্য দোয়া, দরুদ পড়ে ফেলেছেন তাহলে সিজদায়ে সাহু দিতে হবেনা, এটা মুলত এমন যেখানে আপনার নিজের, পরিবারের, দেশের জন্য দোয়া করতে পারেন, কুনুত মুল কথা নয়
Ø  আর যদি দোয়া কুনুতের জায়গায় অন্য কিছু পড়ে ফেলেছেন কিন্তু মনে হবার সাথে সাথে দোয়া কুনুতও পড়েছেন তাহলে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না। অনেক কিছু পড়তে পারেন এখানে
Ø  ১৩. চার রাকাত বিশিষ্ট কোন নামাজে ২য় রাকাতে বসে তাশাহহুদের পর দরুদ দোয়া মাসুরা পড়ে ফেলেছেন, সমস্যা নেইদাঁড়িয়ে পড়ে বাকি রাকাত পড়ে সাহু সেজদা দিবেন। উল্লেখ্য, দিক বা দিকেই সালাম ফিরিয়ে ফেললে দাঁড়িয়ে বাকি নামাজ পড়ে সাহু সেজদা দিলে হয়ে যাবে
Ø  ১৪. রুকুতে সেজদার, সেজদাতে রুকুর তাসবীহ পড়ে ফেললে সমস্যা নেই। এটা আমরা একমাত্র তাসবীহ মনে করি যা ভুল। সেজদা রুকুতে তাসবীহ মুলক ১০-১২ রকম তাসবীহ পড়া যায়
Ø  ১৫. রুকু থেকে সোজা না দাঁড়িয়ে অথবা (রব্বানা লাকা আল হামদ) পুরো না পড়েই সেজদায় গেলে সাহু সেজদা দিতে হবে
আবার সেজদায় পুরো তাসবীহ বার না পড়ে মাথা উঠালে অথবা সেজদার মাঝখানে তাসবীহ পরিমান না বসলে —-সাহু সেজদা দিতে হবে
আসুন সঠিক ভাবে নামাজ আদায় করি।

১৩টি মন্তব্য:

MD HUZAIFA বলেছেন...

যদি ইমাম সাহেব কেরাত পড়তে গিয়ে কোন শব্দ বাদ পড়ে যায়,এবং কেহ লোকমাও দেয়নি।পরে ঈমাম সাহেবের প্রবল ধারণা হচ্ছে যে কোন একটা শব্দ ছাড়া পড়ছে। তখন ঈমাম সাহেব কি সাহু সিজদা দিবেন কি না?

Unknown বলেছেন...

যদি ইমাম সাহেব এশার নামাজে ১ম রাকাআতে ২২ পারা থেকে এবং ২য় রাকাআতে ১৭/১৮ পারা থেকে পড়ে তখন কি সাহু সিজদা দিতে হবে?????

Unknown বলেছেন...

যদি ইমাম সাহেব এশার নামাজে ১ম রাকাআতে ২২ পারা থেকে এবং ২য় রাকাআতে ১৭/১৮ পারা থেকে পড়ে তখন কি সাহু সিজদা দিতে হবে?????

Unknown বলেছেন...

বিতর সালাতে দোয়া কুনুত না পড়লে সাহু সিজদা দিতে হবে, এই মাসায়ালা কোথায় পাইছেন?
রাসুলুল্লাহ্ এর বিতর সালাতের ব্যাপারে ছয় জন বর্ননাকারী সাহাবার মধ্যে কেবলমাত্র একজনই দোয়া কুনুতের ব্যাপারে উল্লেখ করেছেন। তাই মাঝে মাঝে বিতরে দোয়া কুনুত বাদ দেয়া সুন্নাত বলে অনেক স্কলার মত দিয়েছেন।

Unknown বলেছেন...

কেন দিতে হবে? এখানে কি কোন ওয়াজিব হ্রাসবৃদ্ধি ঘটেছে?

নামহীন বলেছেন...

নয় নম্বর নিয়মের ক্ষেত্রে কী কম রাকাত ধরে নামাজ পড়ার পর সাহূ সিজদা দিতে হবে?

Unknown বলেছেন...

যদি ইমাম সাহেব ৩য় রাকাতে ভুলে বসেযায় যাহা ১ তিসবীহ পরিমানের কম। অতঃপর মূসল্লিরা তাকবির দিলে উঠে পরল। এখন কি সাহ সেজদা লাগবে?

নামহীন বলেছেন...

ধন্যবাদ ❤️

Unknown বলেছেন...

না

Unknown বলেছেন...

ইমাম সাহেব যদি ফজর মাগরিব অথবা এসার নামাজে দ্বিতীয় রাকাতে দাঁড়িয়ে সে যদি সুরা ফাতেহা নিম্নস্বরে তেলাওয়াত করে এবং পরবর্তীতে খেয়াল আছে সে দ্বিতীয় রাকাতে নামাজ পড়ছে এবং সূরা ফাতিহা উচ্চস্বরে পড়া শুরু করল এক্ষেত্রে কি সেজদায়ে সাহু দিতে হবে????

Unknown বলেছেন...

প্রতি রাকাতে যেকোনো জায়গা থেকে সুরা পড়তে পারে বা কোনো সুরার আয়াত পড়তে পারে সমস্যা নেই।

Unknown বলেছেন...

এটার উত্তর টা প্লিজ জানাবেন

Unknown বলেছেন...

ফজর নামাজে ঈমাম সাহেব তেলাওয়াত করতে করতেই অন্য সূরায় চলে গেল। পেছন থেকে মুক্তাদি তেলাওয়াত করে সংশোধন করে দিলে ঈমামকে সাহু সিজদা দিতে হবে কি?